নিজেকে অন্যদের থেকে আলাদা রাখার অতি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হচ্ছে নিজের অবস্থার পরিবর্তন করা। নিজের অবস্থার ইতিবাচক পরিবর্তনই নিজের সবচেয়ে শুদ্ধতম শুদ্ধতা। যতদূর সম্ভবত এই পরিবর্তনটাই নিজেকে ভালো রাখার অতি অন্যতম মাধ্যম। যার পরিবর্তিত রূপ যতই শুদ্ধ, তার পরবর্তীকালীন সুখে থাকার প্রবণতা তত বেশি।
নিজেকে পরিবর্তনের জন্য নিজের সাথে যুদ্ধ করতে হয়। এই যুদ্ধটা আত্মিক। এই যুদ্ধে ঢাল তলোয়ার, কামান বন্দুক এসবের কিছুর দরকার পড়ে না। কিন্তু তাও এই যুদ্ধটা অন্য সব যুদ্ধের থেকে অতি কষ্টকর। নিজের ইচ্ছের বিরুদ্ধে গিয়ে কাজ করা পৃথিবীর সবচেয়ে বৃহৎ বিসর্জন।
নিজেকে পরিবর্তন করতে অবশ্যই নিজের ইচ্ছের বিরুদ্ধে গিয়ে কাজ করতে হয়। গতানুগতিক কাজগুলোর বাইরে গিয়ে নতুন অভ্যাস গঠনে নিজেকে নতুন কাজে বেঁধে রাখতে হয়। এই কাজে বেঁধে রাখাটাই আত্মিক যুদ্ধ। যে নিজের সাথে ইতিবাচক যুদ্ধে জয়ী হয় তার পরিবর্তিত রূপ সমৃদ্ধ হতে থাকে। এভাবে মানুষ আত্মিক যুদ্ধে নিজেকে পরিবর্তন করে।
নিজেকে পরিবর্তনের যুদ্ধে নিজের মাঝে দুই পক্ষ কাজ করে। নিজের নিজেই এক পক্ষ ভেঙে চুরমার হয়ে যায়, আর একপক্ষ নতুনভাবে গড়তে থাকে। একই মস্তিষ্কের দুই চিন্তায় মানুষ কিছু সময় দ্বিধায় পড়ে। কোনটা ভালো হচ্ছে কিংবা কোন পথে হাঁটা ভুল হচ্ছে সেই ন্যূনতম বিচারে মানুষ সংশয়ে পড়ে। অথচ এই যুদ্ধে যে জয়ী হয়, পরিবর্তিত রূপ অন্য সব সাধারণের থেকে অনেক অংশেই আলাদা ও সুখময় হয়।
নিজেই সর্ব রূপে পরিবর্তিত হলে নিজের মাঝে দুই পক্ষের লড়াই একসময় থেমে যায়। এক পক্ষ অন্য পক্ষের কাছে আত্মসমর্পণ করে ঐ পক্ষের কাজেই লিপ্ত হয়। তখন যুদ্ধ থেমে যায়। পরিবর্তিত রূপ যুদ্ধে জয়ী হলে অন্য সব সাধারনের থেকে তাদের অবস্থান উপরে থাকে। অন্যদিকে অতীতের রূপ জয়ী হলে নিজের মাঝে হতাশা, ক্রোধ, রাগ ইত্যাদি কাজ করতে শুরু করে। আর ঠিক তখনই মানুষ প্রস্থান খোঁজা শুরু করে। এই অতীতের রূপই মানুষের মাঝে ভালোর পথে কাঁটাতার বসিয়ে ভালো থেকে পুরোপুরি বঞ্চিত করে। তখন আত্মাবস্থান নিম্ন থেকে নিম্নতরে যাওয়া শুরু হয়।
০৫.০২.২০২৪, কুড়িগ্রাম।