আল্লাহর সত্তা ও গুণাবলী চিরন্তন। আল্লাহ অবিনশ্বর। আল্লাহ চির ক্ষমতাশীল। বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সকল ক্ষমতার মালিক একমাত্র তিনি। তিনি মহিমাময়, তিনি মহানুভব। আসমান জমিনের একটি কণাও তার হুকুমের বাইরে নন।
এ বিষয়ে সূরা আর-রহমানে বর্ণিত আছেঃ
‘ভুপৃষ্ঠে যা কিছু আছে সবই নশ্বর, অবিনশ্বর কেবল তোমার প্রতিপালকের সত্তা। যিনি মহিমাময়, মহানুভব।’ (সুরা : আর-রহমান, আয়াত : ২৬-২৭)
আল্লাহর ক্ষমতা অবিনশ্বর। আল্লাহর শক্তিও অবিনশ্বর। তিনি অনন্ত চিরন্তন। তার কোন শেষ নেই।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
هُوَ الْأَوَّلُ وَالْآخِرُ وَالظَّاهِرُ وَالْبَاطِنُ وَهُوَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ
তিনিই الأَوَّلُ (প্রথম), তিনিই الآخِرُ (সর্বশেষ), তিনিই الظَّاهِرُ (সবকিছুর উপরে), তিনিই الْبَاطِنُ (মাখলুকের অতি নিকটে), আর তিনি সর্ব বিষয়ে عَلِيم (মহাজ্ঞানী)। (সূরা হাদীদ: ৩)।
আল্লাহ তা’আলা আল কুরআনে ইরশাদ করেছেন :
ভুমন্ডলে যা কিছু আছে, সব কিছুই নশ্বর, আর অবিনশ্বর শুধু আপনার প্রতি পালকের চেহারা, যিনি মহিমাময় মহানুভব। (সূরা আর রাহমান : আয়াত : ২৬-২৭)।
পরবর্তী আয়াতে আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন :
আসমানসমূহ ও যমিনে যারা আছে, সবাই তাঁর কাছে আবেদন জানায়, তিনি প্রত্যহ গুরুত্বপূর্ণ কাজে নিরত আছেন। (সূরা আর রাহমান : ২৯)।
আল্লাহ তা’আলা সূরা আল ক্বাসাস এ বলেনঃ
﴿وَلَا تَدْعُ مَعَ اللَّهِ إِلَٰهًا آخَرَ ۘ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ ۚ كُلُّ شَيْءٍ هَالِكٌ إِلَّا وَجْهَهُ ۚ لَهُ الْحُكْمُ وَإِلَيْهِ تُرْجَعُونَ﴾
[ القصص: 88]
আপনি আল্লাহর সাথে অন্য উপাস্যকে আহবান করবেন না। তিনি ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নেই। আল্লাহর সত্তা ব্যতীত সবকিছু ধবংস হবে। বিধান তাঁরই এবং তোমরা তাঁরই কাছে প্রত্যাবর্তিত হবে। [সূরা ক্বাসাস: 88]
আল্লাহ তায়ালার এই আয়াতগুলো দেখলেই আল্লাহর সত্তা নিয়ে ধারণা পাওয়া যায়। আল্লাহর সত্তা চিরন্তন। তার কোন বিনাশ নেই। আল্লাহর পরিচয় তাঁর সবচেয়ে সুন্দর নামগুলো-আসমাউল হুসনার মাধ্যমে মানুষ জানতে পারে। আল্লাহ নিজেই তাঁর এসব নাম মানুষকে জানিয়েছেন।
পবিত্র কুরআন এসব নাম সম্পর্কে মুমিনদের নিম্নোক্ত নির্দেশ দিয়েছে :
‘আল্লাহর বিভিন্ন সুন্দর নাম রয়েছে, তাই তাঁকে ওই নামে ডাকবে, যারা তাঁর নামসমূহের প্রতি অবজ্ঞা দেখায় তাঁদেরকে পরিহার করে চলো।’
‘বলো : তোমরা আল্লাহকে ডাক আল্লাহ বা আল রহমান বলে, আল্লাহরই জন্য রয়েছে সর্বোচ্চ সুন্দর নামসমূহ’ (১৭ : ১১০)।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা সর্বদাই পূর্ণতার বিশেষণ দ্বারা বিশেষিত। তিনি মহাস্রষ্টা, সর্বজ্ঞ। তিনি সবকিছুর নিয়ন্ত্রক। আপনাকে আমাকে তিনি সর্বদাই পর্যবেক্ষণ করছেন। তিনি এমন অবিনশ্বর যার কোনো সূচনা ও সমাপ্ত নেই। তাঁর অস্তিত্ব অবশ্যম্ভাবী। তাঁর জ্ঞান চিরন্তন ও বাসিত (অবিভাজ্য)। সর্ববিষয়ে তাঁর জ্ঞান সমভাবে পরিব্যাপ্ত। তার ইচ্ছায় একই বস্তু থেকে ভিন্ন স্বাদের একাধিক বস্তু জন্মায়। তিনি সুক্ষদর্শী।
ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা তোমাদের কথা গোপনেই বলো অথবা প্রকাশ্যে বলো, তিনি তো অন্তর্যামী। যিনি সৃষ্টি করেছেন তিনি কি জানেন না? তিনি সূক্ষ্মদর্শী, সম্যক অবগত।’ (সুরা : মুলক, আয়াত : ১৩-১৪)
বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সবকিছুই তার দৃষ্টির আওতায়। তিনি সব বোঝেন ও শোনেন। অতল সমুদ্রের তলদেশে যা হয় তাও তার বৃষ্টির আওতায়।
ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ সব কিছু শোনেন, সব কিছু দেখেন।’ (সুরা : মুজাদালা, আয়াত : ১)
(চলবে…)
০৪ মে ২০২৪, কুড়িগ্রাম।