ইদানিং বৃষ্টির দিনটাও অপরিচিত হচ্ছে। বয়েজ স্কুলে বৃষ্টিতে ভিজে ফুটবল খেলার জন্যই এক সময় বৃষ্টি ভালো লাগত। তখন শুধু বৃষ্টিই কামনা করতাম। বৃষ্টি আসলেই ফুটবলে পাম দেয়ার জন্য দৌড়াদৌড়ি শুরু হতো।
আমার কাছে বিশেষ করে আমাদের কুড়িগ্রামে এই দৃশ্য চিরচেনা। মাহাদ’দার দোকানে ব্যাগ-বই রেখে চলত খেলা। পরিচিত কেউ খেলা দেখতে আসলে তাকে মাঠে জমে থাকা পানি দিয়ে ভেজানো হতো। পরে সেও নেমে যেত খেলায়।
সমবয়সীদের সাথে ফুটবল খেলার যে আনন্দ সেটা বাইরে কোথাও পাওয়া যায় না। গোল মিস করলে লাগামহীন ভাষায় গালিটুকুও যেন আমাদের কাছে কতই যে চিরচেনা। আসলে, বন্ধুত্বের মাঝে যে কোন কিছুই অসুন্দর নয় সেটা স্কুলের বন্ধুরাই শিখিয়েছে ভালোভাবে।
কুড়িগ্রামে আসলে আমার হাবভাব পাল্টে যায়। বাইরে কেমন জানি নিজেকে বন্দী বন্দী লাগে। বৃষ্টির দিনগুলোতো একেবারেই কনডেম সেল। কুড়িগ্রাম ছাড়া বাইরে কেমন জানি নিজেকে বিদঘুটে লাগে।
কুড়িগ্রামে টানা তিন-চার দিন বৃষ্টিও আমার কাছে আরামের। চিরচেনা এ শহরে বৃষ্টিতে ভিজে ঘুরে বেড়ানো যেন স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত। কুড়িগ্রামে আমার কাছে বৃষ্টি মানেই মনে হয় বৃষ্টিতে ভিজে বয়েজ স্কুলে ফুটবল খেলা।
বাইরে গেলে এই বৃষ্টিটাকে যে কতটা মিস করি, সেটা নিজেও জানিনা। বলতে গেলে, একদম দম বন্ধ হয়ে আসে। চিরচেনা এই শহরে আমার কাছে কোন কিছুই অপছন্দের নয়। শুধু অপছন্দের নয় বললে ভুল হবে, বরং অসুন্দরও নয়।
তবুও ইদানিং চাপে আর বড় হওয়ার ভারে কেন জানি সবকিছু অগোছালো আর অপরিচিত মনে হচ্ছে। জানিনা কবে এটা থেকে মুক্তি আসবে। তবে সত্যি বলতে আগের দিনগুলোই অনেক অনেক ভালো ছিল। আগের দিন গুলোকে স্মরণ করলে নিজের প্রতি খুব কৃতজ্ঞতা লাগে।